রবিবার 17 নভেম্বর 2024 পরঞ্জয় গুহ ঠাকুরতা ২০১৯ সালে আদানির দিল্লির বাড়িতে একটি নৈশভোজ হয়েছিল। সেই নৈশভোজ ঘিরে আবারও চর্চায় আদানিরা। ওই নৈশভোজে মহারাষ্ট্রের বিধানসভা নির্বাচনের কী-ফ্যাক্টর এনসিপির রুটম্যাপ নিয়ে নাকি বিশেষ আলোচনা হয়েছিল। এমনটা বলছেন মহারাষ্ট্রের বর্তমান উপ-মুখ্যমন্ত্রী অজিত পাওয়ার। নির্বাচন কমিশন বলেছে, অজিত পাওয়ারের এনসিপিই হচ্ছে আসল এনসিপি। একটি পোর্টালে প্রকাশিত শ্রীনিবাসন জৈনের সঙ্গে এক সাক্ষাত্কারে অজিত পাওয়ার জানিয়েছেন, আদানির ওই নৈশভোজে উপস্থিত ছিলেন আদানি, অমিত শাহ এবং...
পরঞ্জয় গুহঠাকুরতা ও আয়ুশ জোশী: ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে আদানিগোষ্ঠীর চেয়ারম্যান গৌতম আদানির ঘনিষ্ঠতার কথা কারওরই অজানা নয়। এ নিয়ে প্রায়শই বিরোধীদের নানা তির্যক মন্তব্যের মুখে পড়তে হয় মোদি সরকারকে। তবে এ কথা অস্বীকার করার জো নেই, গৌতম আদানির ব্যবসাকে আন্তর্জাতিক ভাবে সম্প্রসারণের ব্যাপারে বিভিন্ন সময়ে নানা ভাবে সাহায্য করেই থাকেন মোদি। বিশেষত বন্দর, বিমানবন্দর, বিদ্যুৎ, কয়লা খনি এবং অস্ত্রশস্ত্রের ব্যাপারে তো বটেই। ২০১৫-র শুরুর দিকে ভারতীয় একটি সংবাদপত্রের রিপোর্টে উল্লেখ করা...
গোকারকোন্ডা নাগা সাইবাবা। ১৯৬৭ সালে অন্ধ্রপ্রদেশের পূর্ব গোদাবরী জেলার আমলাপুরমের এক দরিদ্র কৃষক পরিবারে জন্ম। জন্মের সঠিক তারিখ জানা যায় না, কারণ তাঁর বাবা মা জন্মতারিখ নথিবদ্ধই করেননি। পিত্তথলি থেকে পাথর বের করার অস্ত্রোপচারের পরে, অপারেশন পরবর্তী জটিলতার কারণে মাত্র ৫৭ বছর বয়সে হায়দরাবাদে মারা গেলেন জি এন সাইবাবা, ২০২৪ সালের ১২ অক্টোবর। পোলিওতে আক্রান্ত হওয়ার পর, পাঁচ বছর বয়স থেকেই হুইলচেয়ার বন্দি সাইবাবা। মেধাবী পড়ুয়া সাইবাবা অমলাপুরমের শ্রী কোনাসিমা ভানোজি রামার্স (SKBR) কলেজের...
দীর্ঘ অস্থিরতা কাটিয়ে রাজনৈতিক পালাবদল ঘটেছে বাংলাদেশে। একটু একটু করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে। কিন্তু নোবেলজয়ী মহম্মদ ইউনূস নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার একাধিক সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে, যার মধ্যে অন্যতম হল বিদ্যুৎ সঙ্কট। সেই আবহে ভারতীয় শিল্পপতি গৌতম আদানির সংস্থার সঙ্গে বিদ্যুৎ চুক্তি পুনর্মূল্যায়ন করে দেখার সিদ্ধান্ত নিল সেদেশের সরকার। বিদ্যুতের বকেয়া নিয়ে টানাপড়েন শুরু হয়েছে এই মুহূর্তে। বকেয়া পরিশোধ না করতে পারলে বিদ্যুৎ পরিষেবা আরও বিঘ্নিত হবে বলে আশঙ্কা করা...
লোকসভা নির্বাচনে আশানুরূপ ফল করতে পারেনি বিজেপি। কোনওমতে শরিক দলের সমর্থনে সরকার গড়তে পেরেছে তারা। তৃতীয়বার দেশের শাসকের কুর্সিতে বসার পর নরেন্দ্র মোদি সরকারের প্রথম বাজেট ছিল মঙ্গলবার। আর কার্যত সেই বাজেট ঘোষণাতে মোদি সরকার স্বীকার করে নিয়েছে, এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে দেশ সবচেয়ে বড় যে অর্থনৈতিক সমস্যার সঙ্গে যুঝছে, তা হল চাকরি। কর্মসংস্থানের বিষয়ে মোদি সরকারের অবস্থা যে এহেন শোচনীয়, এমনটা অবশ্য তারা মানতে নারাজ। বাজেট ঘোষণার সময় তেমন ইঙ্গিতই মিলল অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমনের কাছ থেকে। এদিকে...
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সফল। তাতে সন্দেহ নেই। তাঁর সাফল্যের নেপথ্যের অন্যতম বড় কারণ হচ্ছে, তিনি ভারতবর্ষের রাজনীতিকে চূড়ান্ত পর্যায়ে ব্যক্তিকেন্দ্রিক করতে পেরেছেন। বিষয়টা খানিকটা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের মতো। তিনি জনগণকে বুঝিয়েছেন, লড়াইটা আমি বনাম 'পাপ্পু'। একজন বিরোধী নেতাকে তিনি এভাবেই ডাকতে পছন্দ করেন। ২০১৪ সালে ভারতীয় জনতা পার্টি ৩২ শতাংশের কাছাকাছি ভোট পেয়েছিল। আর ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্সের জোটটি ৩৮ শতাংশের কাছাকাছি ভোট পেয়েছিল। ২০১৯ সালে বিজেপির...
নির্বাচনী অর্থ সংগ্রহের বিষয়ে সরকারের চালু করা নির্বাচনী বন্ড 'অসাংবিধানিক' বলে বাতিল করেছে সুপ্রিম কোর্ট। গত ১৫ ই ফেব্রুয়ারি, প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ তাঁদের রায়ে বলেছেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে কোন রাজনৈতিক দল কার থেকে কত টাকা চাঁদা পেয়েছে - তা ৬ ই মার্চের মধ্যে জানাতে হবে। যেহেতু পুরো টাকাটা লেনদেন হয়েছে ভারতীয় স্টেট ব্যাংকের মাধ্যমে ফলে সেই তথ্য সরবরাহ করার দায়িত্ব তাদের - ই। নির্বাচনে রায় দেন দেশের সাধারণ জনগণ সুতরাং এই তথ্য জানার অধিকার...
ইলেক্টোরাল বন্ড নিয়ে বৃহস্পতিবার রায় দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। ওই বন্ডকে সম্পূর্ণ অসাংবিধানিক বলে জানিয়ে দিয়েছে শীর্ষ আদালত। সামনেই ভোট। এই সময়ে সুপ্রিম কোর্টে এই রায় আমাদের ঠেলে দিয়েছে গতানুগতিক দুটি ভাবনার দিকে। ইংরেজিতে যাকে বলে 'ক্লিশে'। একদিক থেকে দেখতে গেলে এই রায় আসতে সত্যিই খুব দেরি হয়ে গিয়েছে। তবে আবার এটাও তো ঠিক, দেরি হলেও তো হয়েছে। তৎকালীন অর্থমন্ত্রী প্রয়াত অরুণ জেটলি তাঁর বাজেট বক্তৃতায় প্রথম ইলেক্টোরাল বন্ডের প্রস্তাব এনেছিলেন। তবে তা কার্যকর করতে আরও এগারো মাস সময় লেগে গিয়েছিল...
এমন একজন মহিলার বিষয়ে আজ কথা বলব, তিনি যদি বেঁচে থাকতেন বয়স হতো ৬২। ওঁর জন্মদিন ২৯ জানুয়ারি, ১৯৬২। তবে বছর ছয়েক আগে, ২০১৭ সালের ৫ সেপ্টেম্বর তাঁকে তাঁর নিজেরই বাড়ির সামনে একটি লোক মোটরসাইকেলে এসে গুলি করে মেরে ফেলে। ওঁদের পৈতৃক বাড়ি ছিল সেটি, বেঙ্গালুরুর রাজারাজেশ্বরী নগরে। গৌরী লঙ্কেশ নেই, ছয় বছর হয়ে গেল! গৌরী শুধু তো একজন দাপুটে মহিলা, একজন অসাধারণ সাংবাদিকই ছিলেন না। নিজের নামে, গৌরী লঙ্কেশ পত্রিকে প্রকাশ করতেন কিন্তু কেবল 'সাংবাদিক' বললে কিছুই বলা হয় না গৌরী সম্পর্কে। গৌরী সমাজকর্মী ছিলেন।...
মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড়ে বিজেপি ফিরে এসেছে। অনেকেই বিস্মিত এই ঘটনায়। এই বিধানসভা ভোটের সঙ্গে ইন্ডিয়া জোটের সম্পর্ক বা পরবর্তী লোকসভা নির্বাচনের সম্পর্ক অবশ্যই আছে। তবে, বিষয়টা জটিল। কংগ্রেসের এখন নানা দুর্বলতা। প্রথমত, ভারতীয় জনতা পার্টির যে আগ্রাসী হিন্দুত্ব, কট্টর হিন্দুত্ব, তার বিরুদ্ধে নরম হিন্দুত্ব আশ্রয় করলে হার অত্যন্ত স্বাভাবিক। এই ভুল ভূপেশ বাগেল করেছিলেন। বলেছিলেন, অযোধ্যায় রামমন্দির হচ্ছে, তাঁর রাজ্যও নাকি একদা রাম বাস করেছেন। কমলনাথও সেই একই ভুল করলেন। কেবল মন্দিরে মন্দিরে ঘুরলেন...
ধমরা এলএনজি টার্মিনাল নিয়ে ফের সংসদে প্রশ্ন তোলেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। চলতি বছরের মার্চ মাসে। টার্মিনালের ক্যাপাসিটি ব্যবহারের জন্য আইওসিএল এবং গেইলকে কোনও রকম আর্থিক মূল্য চোকাতে হয় কি না তা নিয়ে প্রশ্ন করেন মহুয়া। এ ছাড়াও রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলি ধরমা টার্মিনালের সঙ্গে কী কী চুক্তি করেছে তা নির্দিষ্ট করে জানতে চান তৃণমূল সাংসদ। এর আগেই বলেছি মহুয়ার প্রাক্তন বয়ফ্রেন্ড আইনজীবী অনন্ত দেহাদরাই সিবিআই-এর কাছে বেশ কিছু নথি তুলে দেন। নথিতে আইনজীবীর অভিযোগ, 'ধরমা এলএনজি টার্মিনাল নিয়ে মহুয়ার এত...
সাংসদ মহুয়া মৈত্র। একজন সুবক্তা, আত্মসচেতন, স্বাধীনচেতা মহিলা। তৃণমূল কংগ্রেসের টিকিটে কৃষ্ণনগর লোকসভা থেকে নির্বাচিত। যিনি বরাবর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঘনিষ্ঠ কর্পোরেট-বন্ধু গৌতম আদানির বিরুদ্ধে চাঁচাছোলা সমালোচনা করে থাকেন। ইদানিং মহুয়া একটি ঝামেলায় জড়িয়ে পড়েন। সাংসদ এবং তাঁর আইনজীবী, যিনি মহুয়ার প্রাক্তন বয়ফ্রেন্ডও বটে, এই দু'জনের মধ্যে একাধিক বিষয়ে মতপার্থক্য তৈরি হয়। এমনকি পোষ্য রট উইলার কার হেফাজতে থাকবে তা নিয়েও ঝামেলায় জড়ান দু'জন। এই কাহিনির কুশীলবের তালিকায় আরও একটি নাম...
প্রায় ঘণ্টা দশেক আমি দিল্লি পুলিশের স্পেশ্যাল সেলের অফিসে বসেছিলাম। আর এই চা-কুলচা-ছোলার প্রশ্ন আমাকে জিজ্ঞেস করা হয়েছে কম করে হলেও প্রায় দশবার। ৩ অক্টোবর, ভোর তখন সাড়ে ৬ টা। ব্রেকফাস্ট হয়নি তখনও। ছেলে কলেজ যাওয়ার জন্য বেরোচ্ছে, বাইরে ছাড়তে গিয়ে দেখি দরজায় ন' জন পুলিশ। নিউজক্লিকের বিষয়ে প্রশ্ন করতে এসেছেন। দু’ঘণ্টা এই পুলিশরা গুরগাঁওয়ে আমার ঘরে বসে রইলেন। আমার স্ত্রী তাঁদের চা-জল খাওয়ালেন। একের পর এক প্রশ্ন শুরু করলেন পুলিশকর্মীরা। মোবাইল চাইলেন। আমি বললাম, মোবাইল নেওয়ার আগে আমাকে...
একজন বিরোধী সাংসদকে 'ভড়ওয়া' বলছেন আরেক সাংসদ, বিজেপি সাংসদ। তা শুনে একগাল হাসছেন অন্য বিজেপি সাংসদরা। বিজেপির রমেশ বিধুরি তাঁরই সহনাগরিক বিএসপি সাংসদ, বলা ভালো মুসলিম সাংসদকে বলছেন, "ইস মুল্লে কো বাহার দেখ লুঙ্গা”! হাসছেন বিজেপির নেতারা। অমৃতকালের অমৃতভাষণ বর্ষণ করছেন বিজেপির হিন্দু সাংসদ! রমেশ বিধুরি সংসদে এমন ভাষা প্রয়োগ করার সাহস রাখেন। সাহস জোগায় দেশের ক্ষমতাসীন বিজেপি দল। আর দানিশ আলির পাশে রইলেন কে? দেশজুড়ে বিরোধীরা প্রতিবাদ জানিয়েছেন ঠিকই কিন্তু মায়াবতী চুপ! নিজেরই দলের সাংসদের এমন...
হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের পর অর্গানাইজড ক্রাইম অ্যান্ড করাপশন রিপোর্টিং প্রজেক্ট (OCCRP)। আবারও আর্থিক তছরুপ সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক নজরদারি সংস্থা কাঠগড়ায় তুলল শিল্পপতি গৌতম আদানি এবং তাঁর সংস্থা আদানি গোষ্ঠীকে। শেয়ারদরে কারচুপি থেকে প্রতারণা, বিনিয়োগ আইন লঙ্ঘনের মতো ভুরি ভুরি অভিযোগ নরেন্দ্র মোদি ঘনিষ্ঠ আদানিদের বিরুদ্ধে। আর্থিক তছরুপ নিয়ে তদন্তকারী সাংবাদিকদের নিয়ে তৈরি ওই সংস্থার রিপোর্ট ঘিরে নতুন করে উত্তাল পরিস্থিতি। তদন্ত রিপোর্ট তৈরির ক্ষেত্রে অভিযুক্তপক্ষ সাফাই দেওয়ার সুযোগ পায়। OCCRP-র...
মণিপুরে যে এই ধরনের ঘটনা ঘটবে, এ তো অস্বাভাবিক ছিল না। মেইতেই, কুকি আর নাগা, এদের মধ্যেকার যে দ্বন্দ্ব তা তো আজকের না। এক দশকেরও বেশি সময় ধরে মণিপুর এই দ্বন্দ্বে জেরবার। মণিপুর রাজ্যের অর্ধেকের একটু বেশি সংখ্যার মানুষ ইম্ফলের উপত্যকায় থাকে, যেখানে লোকটাক হ্রদটির অবস্থান। পাহাড়ে থাকেন প্রায় ৪০ শতাংশের কাছাকাছি মানুষ। এই মানুষরা মূলত কুকি এবং নাগা, তাঁদের বেশিরভাগই ক্রিশ্চান ধর্মাবলম্বী এবং তপশিলি জাতি। যখন মণিপুর হাইকোর্টের বিচারক মুরলিধরন বললেন, মেইতেইদেরও এই অনুসূচির জনজাতির তালিকাতে আনা হবে...
কর্নাটক নির্বাচনের ফলাফল দেখে কংগ্রেস এবং অন্যান্য বিজেপি-বিরোধী দল স্বাভাবিক ভাবেই উচ্ছ্বসিত। অনেকে বেশ কিছুটা এগিয়ে এমনও বলছেন, এ হল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর একনায়কতন্ত্রের শেষের শুরু। এমন সিদ্ধান্তে পৌঁছনোর সময় হয়তো এখনও আসেনি। আগামী সাধারণ নির্বাচন এখনও অন্তত দশ মাস দূরে। তার মধ্যে অনেক কিছুই ঘটে যেতে পারে। তবুও কর্নাটক নির্বাচনের বিশেষ তাৎপর্য আছে। কারণ, এটা হল দক্ষিণ ভারতের প্রথম রাজ্য যেখানে গত দেড় দশক ধরে বার বার ঘুরেফিরে ক্ষমতায় এসেছে বিজেপি। বর্তমানে দক্ষিণের পাঁচটি রাজ্যের...
ভারতের ইতিহাসে বড় শিল্পপতি এবং তাঁদের আকাশছোঁয়া সাফল্যের নিদর্শন কম নয়। বিভিন্ন সময়ে এঁদের অনেকেরই ব্যবসা-সাম্রাজ্য প্রসারিত হয়েছে তীব্র গতিতে। হাতের কাছেই উদাহরণ— টাটা গোষ্ঠী, বিড়লা গোষ্ঠী (বিশেষত বিভাজনের আগে), অম্বানী গোষ্ঠী ইত্যাদি। কিন্তু সম্ভবত এঁদের সেই গতিকেও ছাড়িয়ে গিয়েছে গৌতম আদানির নেতৃত্বে আদানি ঘরানা। যে ভাবে আদানি গোষ্ঠীর ব্যবসা ভারতের অর্থ-ব্যবস্থার আলাদা আলাদা ক্ষেত্রে ডানা মেলেছে, তার মধ্যে অনেক ক্ষেত্রে তাদের একটা ‘দখল’ বা নিয়ন্ত্রণ তৈরি হয়েছে, তা সত্যি বলতে অনেককে আশ্চর্য...
৩০ জানুয়ারি, মোহনদাস কর্মচন্দ গান্ধীর মৃত্যুদিনে শ্রীনগরে শেষ হল কংগ্রেসের ভারত জোড়ো যাত্রা। পদব্রজে কন্যাকুমারী থেকে কাশ্মীর পৌঁছতে রাহুল গান্ধীর লেগেছে ১৩৫ দিন। প্রতিদিন প্রায় ২০-৩০ কিলোমিটার হেঁটেছেন তিনি। প্রায় চার হাজার কিলোমিটারের বেশি পথ রাহুল অতিক্রম করেছেন ১৩টি রাজ্য এবং একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মধ্য দিয়ে। চলতি বছরে কর্নাটক, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তীসগঢ়-সহ বেশ কয়েকটি রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। রাজ্যওয়াড়ি নির্বাচনে পরিমাপ করা যাবে না ভারত জোড়ো যাত্রার ফসল কতটা ঘরে তুলতে পেরেছে কংগ্রেস।...
আজ নতুন নয়। যুগ যুগ ধরে, হয়তো সেই আদম-ইভের সময় থেকেই নিষিদ্ধ ফলে আমাদের আকর্ষণ বেশি— চিরকাল। সম্ভবত সেই কারণেই বার বার দেখা গিয়েছে, কোনও বই নিষিদ্ধ করা হলে, তা পড়ার জন্য বহু জনের উৎসাহ বাড়ে। তাগিদ বাড়ে যেখান থেকে হোক, তা খুঁজে বার করার। কোনও চলচ্চিত্রের উপরে নিষিদ্ধ (ব্যান) তকমা সেঁটে দিলে, তৈরি হয় তা দেখার বাড়তি তাগিদ। স্বাভাবিক আকর্ষণেই। আর সত্যি বলতে, আজকের এই ইন্টারনেটের জাল-বিস্তৃত যুগে কোনও কিছুকে স্রেফ নিষিদ্ধ বলে দাগিয়ে দিয়ে চোখের আড়াল করাও শক্ত। এই যখন পরিস্থিতি, তখনই সম্প্রতি ভারত...
আজ নতুন নয়। যুগ যুগ ধরে, হয়তো সেই আদম-ইভের সময় থেকেই নিষিদ্ধ ফলে আমাদের আকর্ষণ বেশি— চিরকাল। সম্ভবত সেই কারণেই বার বার দেখা গিয়েছে, কোনও বই নিষিদ্ধ করা হলে, তা পড়ার জন্য বহু জনের উৎসাহ বাড়ে। তাগিদ বাড়ে যেখান থেকে হোক, তা খুঁজে বার করার। কোনও চলচ্চিত্রের উপরে নিষিদ্ধ (ব্যান) তকমা সেঁটে দিলে, তৈরি হয় তা দেখার বাড়তি তাগিদ। স্বাভাবিক আকর্ষণেই। আর সত্যি বলতে, আজকের এই ইন্টারনেটের জাল-বিস্তৃত যুগে কোনও কিছুকে স্রেফ নিষিদ্ধ বলে দাগিয়ে দিয়ে চোখের আড়াল করাও শক্ত। এই যখন পরিস্থিতি, তখনই সম্প্রতি ভারত...
বিশ্বকাপ ফুটবলের রেশ এখনও কাটেনি। তাই এক ঝলকে কোনও ফুটবল ম্যাচের স্কোরলাইন মনে হওয়া হয়তো একেবারে অস্বাভাবিক নয়। কিন্তু আদতে এটি গত এক দশকে সম্ভবত সব থেকে বেশি চর্চিত বিষয় সম্পর্কে দেশের সর্বোচ্চ আদালতের রায়ের বিন্যাস। সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চের রায়: ২০১৬ সালের নভেম্বরে নোট বাতিল করা হয়েছিল আইন মেনেই। বেঞ্চের চার বিচারপতি (এস আব্দুল নাজ়ির, বি আর গাভাই, এ এস বোপান্না এবং বি রামসুব্রমনিয়ন) বলেছেন যে, পুরোদস্তুর আইন মেনেই নোটবন্দি করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। পদ্ধতিগত ত্রুটি...
যেমনটা ভাবা গিয়েছিল, অনেকটা সে রকমই। গুজরাতে বিজেপি। হিমাচল প্রদেশে কংগ্রেস। আর দিল্লি পুরভোটে আম আদমি পার্টি (আপ)। সাম্প্রতিক তিন ভোটে জয়তিলক আঁকা হল তিন দলের কপালে। তবে সব কিছু সম্ভবত মিললও না। যেমন, টানা ২৭ বছর ক্ষমতায় থাকা দলের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠান-বিরোধিতা, বাধ্য হয়ে একের পর এক মুখ্যমন্ত্রী বদল, ভোটের মুখে মোরবীতে সেতু বিপর্যয়— এত ধাক্কা সামলে গুজরাতে বিজেপির এতখানি একতরফা জয়, এমন প্রবল গেরুয়া ঝড় সম্ভবত আঁচ করতে পারেননি দলের বহু সমর্থকও। হিমাচলে এমনিতেই প্রতি পাঁচ বছর অন্তর সরকার...
আসন্ন গুজরাত নির্বাচনে ভারতীয় জনতা পার্টির ভরাডুবি হবে— এমন ভবিষ্যদ্বাণী করা পণ্ডিতের সংখ্যা এখনও পর্যন্ত কার্যত শূন্য। বরং অনেকেই মনে করছেন, নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহের রাজ্যে ফের এক বার ক্ষমতায় ফিরতে তেমন বেগ পেতে হবে না বিজেপিকে। কিন্তু প্রশ্ন হল, তা সত্ত্বেও এত মাস ধরে কেন বার বার প্রচারের জন্য নিজের রাজ্যে ছুটে যেতে হয়েছে প্রধানমন্ত্রীকে? কেন মাটি কামড়ে এমন মরিয়া প্রচার? কেন এমন বিপুল তৎপরতা? সত্যিই কি নিজেদের মাটিতে জনতার মুখ ফিরিয়ে নেওয়ার ভয় পাচ্ছেন মোদী-শাহ জুটি? আগামী ১ এবং ৫ ডিসেম্বর...
বিশ্ব অর্থনীতির আকাশে ফের কালো মেঘ। তাবড় অর্থনীতিবিদ থেকে শুরু করে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের বড়কর্তা— সকলেই প্রায় এক বাক্যে মানছেন যে, বিশ্বব্যাপী আর্থিক সঙ্কট শুরু হয়ে গিয়েছে। সামনের বছর তা আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা। এখনও পর্যন্ত যা ইঙ্গিত, তাতে এর প্রভাব ভারতের উপরেও পড়বে। এমনিতেই ভারতে অর্থনৈতিক সমস্যা অঢেল। বিশ্বজোড়া মন্দার চোখরাঙানিতে সামনের বছরদেড়েক সেগুলি আরও বহু গুণ বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে ১৯৩০-এর দশকে হওয়া গ্রেট ডিপ্রেশন বা মহামন্দার কথা আজও কেউ ভোলেননি।...
গত ২ অক্টোবর, এ বারের গান্ধী জ য়ন্তীতে কয়েকটি খুব গুরুত্বপূ র্ণ কথা বলেছেন দত্তাত্রেয় হো সাবোলে। তা নিয়ে সংবাদমাধ্যমে চর্চাওহয়েছে বিস্তর। হবে না-ই বা কেন? হোসাবোলে রাষ্ট্রীয় স্ বয়ংসেবক সঙ্ঘের (আরএসএস) সাধা রণ সম্পাদক। দু’নম্বর নেতা। এবং অনেকের মতে সরসঙ্ঘচালক মোহন ভা গবতের সম্ভাব্য উত্তরসূরি। এই ঘো র নরেন্দ্র মোদীর জমানায় এ হেন হোসাবোলের মুখে যদিবেকারত্ব, অ সাম্যের মতো বিষয় উঠে আসে, তা সংবাদমাধ্যমের নজর কাড়ার কথা, কেড়েওছে। এক জন রাজনৈতিক বিশ্ লেষক হিসেবেআমার প্রশ্ন হল, হঠা ৎ তাঁর গলায়...
আর্থিক নয়ছয় বিরোধী আইন (প্রিভেনশন অব মানি লন্ডারিং অ্যাক্ট বা পিএমএলএ)— কোনও সন্দেহ নেই যে, এই আইনই আজ মোদী সরকারের সব থেকে শক্তিশালী ও মারাত্মক অস্ত্র। এই আইনে বলীয়ান হওয়ায় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) হাতে যা ক্ষমতা আছে, তা অন্তত পুলিশের হাতে নেই। বিরোধীদের অভিযোগ, এই আইনকে হাতিয়ার করে বেছে-বেছে শুধু বিরোধীদের নিশানা করছে নরেন্দ্র মোদীর সরকার। শুধু বিরোধী নেতাদেরই পড়তে হচ্ছে ইডি-র তদন্তের মুখে। সেই ইডি, যা কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রকের অংশ। বিরোধী শিবিরের বক্তব্য, মহামান্য সুপ্রিম...
ভারত সরকার মুদ্রাস্ফীতি বোঝার জন্য দুই ধরনের সূচক ব্যবহার করে, একটি হলো হোলসেল প্রাইস ইনডেক্স, বা পাইকারি মূল্য সূচক, অন্যটি হলো কনজিউমার প্রাইস ইনডেক্স বা উপভোক্তা মূল্য সূচক। পাইকারি মূল্য সূচকে দেখা যায়, যারা উৎপাদন করছে, তাদের খরচ কীভাবে বাড়ছে, অন্যদিকে উপভোক্তা মূল্য সূচক দেখায়, সাধারণের জীবনযাপন কীভাবে প্রভাবিত হয় মূল্যবৃদ্ধির ফলে। মানুষের আয়ের সঙ্গে যদি মুদ্রাস্ফীতির গতির সামঞ্জস্য না থাকে, তাহলে জীবনযাপনের মানদণ্ড পড়তে থাকে। ভারতে এটাই ঘটে চলেছে বিগত কয়েক বছর ধরে। সাধারণভাবে বেঁচে...
শ্রীলঙ্কা বিক্ষোভে উত্তাল। গত কয়েক দিন ধরে প্রতিবাদ-আন্দোলনের যে ছবি ওই দ্বীপরাষ্ট্রে দেখা গিয়েছে, তা প্রায় অকল্পনীয়। কাতারে-কাতারে মানুষ নেমে এসেছেন রাস্তায়। কারও হাতে দেশের জাতীয় পতাকা, কারও কোলে সন্তান। একযোগে ‘অপদার্থ’, ‘দুর্নীতিগ্রস্ত’ শাসকদের থেকে কার্যত যে কোনও -- মূল্যে মুক্তি চাইছেন তাঁরা। আর সেই সূত্রেই তৈরি হচ্ছে অকল্পনীয় সমস্ত ছবির কোলাজ। যেমন, কয়েক দিন আগেই শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত বাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। তার পরে দেখা গেল, অগুনতি মানুষ ঢুকে পড়েছেন...
সম্প্রতি উদয়পুরে কংগ্রেসের যে চিন্তন শিবির হলো, সেখানে মল্লিকার্জুন খাড়গে বললেন, অন্যান্য দলগুলির সঙ্গে সম্পর্ক ভালো রাখতে হবে, যাতে বিজেপি-বিরোধী জোটের সম্ভাবনা জারি থাকে। এই চিন্তন শিবিরের শেষ বক্তা ছিলেন রাহুল গান্ধী। মঞ্চে উঠে তিনি বললেন, স্থানীয় দলগুলি জাতিভিত্তিক রাজনীতি করে, এরা বিজেপিকে হারাতে পারবে না, পারলে কংগ্রেসই পারবে। একথা বলার কি আদৌ কোনও প্রয়োজনীয়তা ছিল? রাহুল গান্ধীর বয়স ৫১ বছর। ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনের পর কংগ্রেস প্রেসিডেন্টের পদ থেকে পদত্যাগ করেন তিনি। নরেন্দ্র মোদি...
আর্থিক উদারিকরণের হাত ধরেই এ দেশে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার বিলগ্নিকরণ এবং পরে বেসরকারিকরণের সূত্রপাত। বিষয়টি আরও বেশি গতি পায় প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ীর জমানায়। ওই সময়েই তো বিলগ্নিকরণের জন্য সেই বহু বিতর্কিত পৃথক মন্ত্রক। সরকারি সংস্থা, যা কি না আদপে দেশের সাধারণ মানুষের সম্পত্তি, তা বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়া আদৌ যুক্তিযুক্ত কি না, তা নিয়ে গোড়া থেকেই তর্ক বিস্তর। এবং আমি নিশ্চিত, অর্থনীতিবিদদের মধ্যে সেই বিতর্ক আবহমান কাল ধরে চলতেই থাকবে। এক পক্ষের মতে, বেসরকারি সংস্থা পরিচালনা...
তেল থেকে আটা, চিনি থেকে চাল— আজ দেশে প্রায় সমস্ত নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম যে রকেট গতিতে বাড়ছে, তাতে নাভিশ্বাস উঠছে সাধারণ মানুষের। বিশেষত খাদ্যসামগ্রীর লাগামছাড়া দর বৃদ্ধিতে নাকাল দরিদ্ররা। আমার মতে, সদ্য কোভিড উঠতে শুরু করা এমন এক সঙ্কটের সময়ে এই মূল্যবৃদ্ধি আম জনতার উপর এক প্রকার অত্যাচার। বাজারে জিনিসের দাম ঠিক হয় চাহিদা-জোগানের ভিত্তিতে। তাই সমস্ত কিছুর দর সরাসরি নিয়ন্ত্রণ করা সরকারের পক্ষে হয়তো সম্ভব নয়। কিন্তু তা বলে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম যেন সাধারণ মানুষের একেবারে...
মোদি-বিজেপির প্রচার সামলানো ব্যক্তিই ফেসবুক অধিকর্তা, সম্পর্কের শৃঙ্খলে বাঁধা ব্যবসায়িক স্বার্থও! পরাঞ্জয় গুহ ঠাকুরতা, রবি নায়ার, আবির দাশগুপ্ত শিবনাথ ঠুকরাল (Shivnath Thukral), ২০২০-র মার্চ মাস থেকে ভারতে হোয়াটসঅ্যাপ আইএনসি-র (ফেসবুক, অধুনা মেটার মালিকানাধীন)জননীতি নির্ধারণ বিভাগের প্রধান। এক সময় ওপালিনা টেকনোলিজ, যা কিনা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi), প্রধানমন্ত্রীর দফতর (PMO), ভারতীয় জনতা পার্টি (BJP) এবং কেন্দ্রীয় সরকারের বস্ত্রমন্ত্রককে সফ্টওয়্যার সংক্রান্ত সহায়তা...
কলম্বোর বাজারে ফল, আনাজের দাম দুই থেকে তিন গুণ বেড়েছে। মাত্র কিছু দিনের মধ্যে। চাল দেড় গুণ। দিনের বেশির ভাগ সময় বিদ্যুৎ নেই। রাস্তায় স্তূপীকৃত জঞ্জাল। কারণ, তা তুলতে আসার মতো জ্বালানিটুকুও পৌরসভার গাড়িতে নেই! শিকেয় উঠেছে পড়াশোনা। পরীক্ষা দিতে পারছে না স্কুলের ছেলেমেয়েরা। দেবে কী করে? কাগজ আমদানির পয়সাই তো শ্রীলঙ্কা সরকারের নেই! তাই বই-খাতা নেই, ছাপাখানাও বন্ধ। শুধু দু’বেলা দু’মুঠো খাবার পাওয়ার আশায় অনেকে সব ছেড়েছুড়ে ওই প্রতিবেশী দেশ থেকে চলে আসতে চাইছেন ভারতে। অভূতপূর্ব সঙ্কটে...
লখনউয়ের মসনদে যোগী আদিত্যনাথের ফিরে আসা। আরও তিন রাজ্যে (উত্তরাখণ্ড, মণিপুর ও গোয়া) বিজেপির দাপুটে জয়। এবং অবশ্যই পঞ্জাবে আপ-ঝড়। পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা ভোটের ফল নিয়ে ইতিমধ্যেই চর্চা হয়েছে বিস্তর। আগামি কয়েক দিনও তা জারি থাকার সম্ভাবনা। তাই কোন রাজ্যে কে কত আসনে জয়ী কিংবা কোথায় কোন দল সরকার গড়তে চলেছে, সেই সমস্ত কথা ফের তুলে ধরে এই লেখার ভার বাড়াতে চাই না। তার থেকে এখানে বরং আমি তুলে ধরার চেষ্টা করছি এমন পাঁচটি বিষয়, যা আমাদের অনেককে চমকে দিয়েছে। হ্যাঁ, স্বীকার করতে দ্বিধা নেই, আমাকেও...
সন্দীপ পান্ডে ভারতের অন্যতম সামাজিক ও রাজনৈতিক কর্মী। বর্তমানে সোশ্যালিস্ট পার্টি (ইন্ডিয়া)র সাধারণ সম্পাদক। ড: দীপক গুপ্তা (বর্তমানে আই আই টি কানপুরের প্রফেসর) এবং ভি জে পি শ্রীবাস্তবের সঙ্গে ‘আশা ফর এডুকেশন’ তৈরি করেছেন তিনি। আইআইএম ব্যাঙ্গালোর থেকে বেনারসের আই আই টি–দেশের নামিদামী সংস্থাগুলিতে ভিজিটিং প্রফেসর হিসেবে শিক্ষকতা করেছেন। ২০০২ সালে পেয়েছেন র্যামোন ম্যাগাসেসে পুরস্কারও। সম্প্রতি নিউজক্লিকে তাঁর একটি সাক্ষাৎকার নেন প্রখ্যাত সাংবাদিক পরঞ্জয় গুহঠাকুরতা। নীচে নিউজক্লিকের অনুমতিক্রমে...
পাঞ্জাবে ভোট হয়ে গেল। দেখা গেল ভোটদানের হার গত কয়েক বছরের হিসেবে সর্বনিম্ন। বিশেষত আপ যে অঞ্চলগুলিতে ভালো সমর্থন রয়েছে বলে দাবি করেছিল, পরিসংখ্যান জানাচ্ছে মূলত সেই অঞ্চলগুলিতেই প্রদত্ত ভোটের সংখ্যা অপ্রত্যাশিত রকমের কম। যে সব অঞ্চলে আম আদমি পার্টির বিধায়ক রয়েছে, সেই অঞ্চলগুলিতেও ভোটদানে অনীহা ছিল চোখে পড়ার মতো। মাসখানেক আগেও মনে করা হচ্ছিল এই নির্বাচনে কংগ্রেস বড় ব্যবধানে জয়ী হবে। তার অনেকগুলি কারণ ছিল। বিশেষত কৃষক আন্দোলনের ব্যাপক প্রভাব পাঞ্জাবের নির্বাচনে পড়তে বাধ্য। একমাত্র বিজেপি...
উত্তরপ্রদেশে বিধানসভা নির্বাচন শুরু হয়ে গিয়েছে। প্রথম দফার ভোট মিটেছে গতকালই। সেই উত্তরপ্রদেশ, যা জনসংখ্যার নিরিখে দেশের বৃহত্তম রাজ্য। ভারতের প্রায় ১৩৫ কোটি মানুষের মধ্যে গড়ে প্রতি ছ’জনে এক জন এই রাজ্যের বাসিন্দা। যদি উত্তরপ্রদেশ আলাদা দেশ হত, তা হলে জনসংখ্যার বিচারে সারা বিশ্বে তার আগে থাকত মাত্র পাঁচটি দেশ। চিন, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, আমেরিকা এবং ব্রাজ়িল। শুধু কি তাই? স্বাধীনতার ৭৫ বছর পেরিয়েও ভারতবর্ষের অধিকাংশ প্রধানমন্ত্রী উত্তরপ্রদেশের। নরেন্দ্র মোদী হয়তো এ রাজ্যের নন, কিন্তু তাঁরও...
প্রশ্ন: সিপিএম-এর রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র বলেছেন যে, তৃণমূল কংগ্রেস এবং বিজেপি দল দু’টি চরিত্রগত ভাবে এক নয়। এ বিষয়ে আপনার কী মত? প্রণব বর্ধন: এই কাগজেই নির্বাচনের আগে একটি সাক্ষাৎকারে বলেছিলাম যে, বামপন্থীরা একটা ভুল করছেন— ওঁরা দু’দলকে একই ধরনের শত্রু বলে মনে করছেন। মতাদর্শে ও কর্মপ্রণালীতে বিজেপি এখন ভারতের রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক জগৎকে এক ভয়ানক বিপদের দিকে নিয়ে যাচ্ছে, সাম্প্রদায়িক বিষজর্জর স্বৈরতান্ত্রিক হিন্দুরাষ্ট্রই ওদের নিশানা, সেটা আমাদের মাথায় রাখতে হবে। তৃণমূলের অনেক দোষ আছে—...
আমাদের ইতিহাসে ফোনে আড়ি পাতার উদাহরণ অনেক আছে। এই রকম আড়ি পাতার ঘটনায় কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী রামকৃষ্ণ হেগড়েকে পদত্যাগ করতে হয়েছিল। তারপরে নীরা রাদিয়ার কথা রেকর্ড করে রাখা হয়েছিল, সেটা নিয়েও একটা কেলেঙ্কারি হয়ে গেল। পেগাসাসের সফটওয়ার যে এরা ব্যবহার করছে তা আমরা ২০১৯-এই জানি। ভীমা কোরেগাঁও মামলায় অভিযুক্তদের কম্পিউটারে ম্যালওয়ার ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। সুতরাং বিস্মিত হবার কোনও কারণ নেই। কিন্তু সরকার বারংবার কেন বলছে আমরা আইন মেনে চলছি? যদি আইন মানো তাহলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সচিবের অনুমতি নিয়ে এই কাজ...
জরুরি অবস্থা (Emergency) ঘোষণার দিনটার স্মৃতি এখন ইষৎ ঝাপসা। সেই ঝাপসা স্মৃতির কাচ থেকে ধুলো সরিয়ে এটুকু বলতে পারি ইন্দিরা গান্ধী যখন জরুরি অবস্থার জন্য ক্ষমা চাইলেন আমাদের মনে হয়েছিল, ইতিহাসের এক দুঃসহ অধ্যায়ের অবসান হল। আমরা ভেবেছিলাম হয়তো এর পুনরাবৃত্তি আর কখনও হবে না। ৪৬ বছর পেরিয়ে এসে আজ বুঝতে পারি, আমরা ভুল ভেবেছিলাম। জরুরি অবস্থার ভূত আমাদের আজও প্রতি পল অনুপলে আবার তাড়া করছে, মাত্রাটা স্রেফ আলাদা। সেদিনের জরুরি অবস্থা যদি গণতন্ত্রে কুঠারাঘাত হয়, তবে আজকের সংখ্যাগরিষ্ঠের রাজনীতি...
পশ্চিমবঙ্গ-সহ পাঁচ রাজ্যে ভোটযুদ্ধ শুরু হয়ে গিয়েছে। কিন্তু ভোটে আর্থিক অস্বচ্ছতা রোখার শেষ চেষ্টাটুকুও জলেই গেল। ইলেক্টরাল বন্ড বিক্রির বিরুদ্ধে অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্র্যাটিক রিফর্মস (এডিআর)-এর তরফে আইনজীবী প্রশান্তভূষণের দায়ের করা সমস্ত আবেদনই নাকচ করে প্রধান বিচারপতি এস এ বোবদের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ। আমাদের দুর্ভাগ্য মোদি সরকারের অন্যতম বড় দুর্নীতি সম্পর্কে জনসচেতনতা তৈরি হল না, দেশের শীর্ষ আদালতকেও বোঝানো গেল না বিষয়টি কেন গণতন্ত্রের পক্ষে অতি বিপজ্জনক। আমাদের ভয়, এ ব্যাপারে আম আদমির চোখ-কান...
পশ্চিমবঙ্গের এই নির্বাচনের প্রভাব শুধু এই রাজ্যের রাজনীতিতেই প্রভাব ফেলবে এমন নয়, দেশের গণতন্ত্রের ভবিষ্যতও নির্ভর করছে এই নির্বাচনের ওপর। যদি এই নির্বাচনে বিজেপি জেতে, তাহলে মোদী-শাহের নেতৃত্বাধীন বিজেপি অশ্বমেধের ঘোড়ার মতোই অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠবে। সেক্ষেত্রে বিজেপি যে বিরোধী-মুক্ত ভারতের স্বপ্ন দেখে, সেই বিরোধী-মুক্ত ভারতের রূপটি পূর্ণতা পাবে এই বাংলায়। এই পরিস্থিতিকে আমরা নিঃসঙ্কোচে ‘নির্বাচিত স্বৈরতন্ত্র’ বলে অভিহিত করতে পারি। নির্বাচনী ফলাফলে বিজেপি যদি সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পায় এবং সরকার গঠন...
ফেসবুকের বয়স মাত্র সাড়ে ষোলো বছর। কিন্তু বিশ্বে তার বিপুল বিস্তার। ভারতে ওই সংস্থার তিনটি ডিজিটাল সমাজমাধ্যম মঞ্চ খুবই জনপ্রিয় হয়েছে— ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম আর হোয়াটসঅ্যাপ। ৪০ কোটি ভারতীয় হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করছেন, ফেসবুক ব্যবহার করছেন প্রায় ৩৫ কোটি। এই বিশাল প্রসার উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়ায় যখন দেখা যায় যে, এই ডিজিটাল মঞ্চের মাধ্যমে ছড়ানো হচ্ছে বিদ্বেষপূর্ণ বার্তা। বিশেষত গত কয়েক বছরে ভারতে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে লাগাতার যে সব উস্কানিমূলক বার্তা প্রচার হচ্ছে, তার পিছনে ফেসবুক...
সে ঘরে বিদ্যুৎ-সংযোগও নেই। অরুণবাবুর যুক্তি, যতদিন না প্রতিটি মজুরের মাথায় ছাদ হচ্ছে, ঘরে বিদ্যুৎ সংযোগ পৌঁছচ্ছে, ততদিন এই সুবিধে তাঁরও প্রাপ্য নয়। লিখছেন পরঞ্জয় গুহঠাকুরতা কমরেড অরুণকুমার রায় চলে গেলেন গত রবিবার। হাজার হাজার মানুষের উপস্থিতিতে সোমবার ধানবাদে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হল। একে রায় নামে তিনি লোকপ্রিয় ছিলেন। গত রবিবার ঝাড়খণ্ডে তাঁর মৃত্যুতে শ্রমিকের অধিকার নিয়ে লড়াইয়ের এক দীর্ঘ অধ্যায় থেেম গেল। সেই অধ্যায়কে ফিরে দেখতেই কলম ধরা। ১৯৩৫ সালে একে রায়ের জন্ম অবিভক্ত বাংলাদেশের রাজশাহী...
ম ঙ্গলবার দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবালকে তাঁর অফিসে ঢুকতে দেওয়া হয়নি, কারণ তাঁর সরকারের এক প্রবীণ আধিকারিকের দুর্নীতির অভিযোগে সিবিআই হানা দিয়েছিল। দৃশ্যত প্রতিহিংসামূলক এমন একটা আচরণ নরেন্দ্র মোদীর সরকার কেন করল? আপাতদৃষ্টিতে এ তো রাজনৈতিক আত্মহত্যার শামিল। দিল্লি সরকারের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি রাজেন্দ্র কুমারের অফিসে এবং বাসস্থানে অনুসন্ধানের সঙ্গত কারণ থাকুক বা না-ই থাকুক, এই হানাদারির কল্যাণে মোদী সরকার কেজরীবালকে হিরো বানিয়েই ছাড়বে, এমন সম্ভাবনা জোরদার। প্রশ্ন হল, কেন তারা এটা করল...
আগামী তিন মাস ভারতীয় রাজনীতিতে যে বিষয়টির উপর সবচেয়ে বেশি নজর থাকবে, সেটি হল বিহারের বিধানসভা নির্বাচন। এই নির্বাচনের ফল কী হয়, জাতীয় রাজনীতির ভবিষ্যৎ গতিপ্রকৃতির পক্ষে সেটা গুরুত্বপূর্ণ হতে বাধ্য। নীতীশ কুমারকে সামনে রেখে জেডিইউ এবং আরজেডি’র যে জোটটি ভোটযুদ্ধে অবতীর্ণ, বিজেপি ও তার সঙ্গীরা যদি তাকে হারিয়ে বিহারে ক্ষমতা দখল করতে পারে, তা হলে নরেন্দ্র মোদীর সমর্থকরা আরও অনেক জোর গলায় বলবেন, তিনিই ‘দ্বিতীয় প্রজাতন্ত্র’-এর অবিসংবাদী সর্বাধিনায়ক। কিন্তু যদি সেটা না হয়, তা হলে মোদীকে তাঁর দলের...
দুর্নীতি দেখেনি, এমনটা নয়। প্রতাপশালী রাজনীতিক, প্রভাবশালী আমলা আর মহাকোটিপতি ব্যবসায়ীদের দুষ্টচক্র আমাদের চেনা। তদন্ত চলাকালীন অভিযুক্ত বা সাক্ষী খুন? তা-ও বহু বার দেখেছে ভারত। তা হলে ব্যপম কাণ্ডে এমন কী হল, যার ধাক্কায় শিবরাজ সিংহ চৌহানের দশ বছরের পুরনো মসনদও টলমল করছে, দিল্লিতে বিজেপি-র ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে? নরেন্দ্র মোদীর মুখে কুলুপ, বিজেপি-র অন্য অনেক নেতা হরেক কুযুক্তি সাজিয়ে বিষয়টিকে হালকা করার চেষ্টা করছেন, এবং আশঙ্কা হচ্ছে, সেই চেষ্টা বুমেরাং হয়ে ধেয়ে আসতে পারে ভোপাল ও দিল্লির...
শি শুশিক্ষায় যাতে কোনও বাধা না পড়ে, সেই উদ্দেশ্যেই নাকি কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে ২০১২ সালের শিশু শ্রম নিবারণী আইনে নতুন সংশোধনী যোগ করার সিদ্ধান্ত হল। অতঃপর শিশুরা আইনত বাড়িতে ও পারিবারিক ব্যবসায় কাজ করতে পারবে। তাতে ভারতীয় সমাজের নিজস্ব কাঠামোটির কী লাভ হবে, নরেন্দ্র মোদীই জানেন— কিন্তু, যে উদ্দেশ্যে এ আইন তৈরি হয়েছিল, তার মূলে আঘাত করল এই সংশোধনী। শোষণ থেকে শিশুদের বাঁচানোর রাস্তাটাই বন্ধ হয়ে গেল। ১৯৮৬ সালের শিশুশ্রম নিবারণী আইনে বলা হয়েছিল, শিশুদের ১৮টি নির্দিষ্ট পেশায়, এবং ৬৫ ধরনের কাজে...
প্র থম বছর না পুরোতেই নরেন্দ্র মোদী সরকারের মধুচন্দ্রিমা, ‘শেষ হল’ না বলে বলাই যায়, হাওয়ায় মিলিয়ে গেল। এটা ঠিক যে এই মুহূর্তে মোদী সরকারের সামনে তেমন কোনও বড় সংকট নেই। এটাও ঠিক যে, এখন যাঁরা তাঁর সমালোচক, তাঁদের অনেকেই এক বছর আগে তাঁর আদ্যন্ত সমর্থক ছিলেন। এবং সেটাই তাঁদের হতাশা ও ক্ষোভের প্রধান কারণ। মোদীর উপর ভর করে একটা ‘বিগ ব্যাং’ সংস্কারের প্রত্যাশায় ছিলেন যাঁরা, তাঁরাই আজ বিক্ষুব্ধদের প্রথম সারিতে। ব্যাপারটা প্রত্যাশিত ছিল না কি? ভোটের সময়ে মোদীকে ঘিরে যে ধরনের একটা অবাস্তব প্রত্যাশা...